বাংলা প্রশ্নোত্তর

শিবায়ন ও নাথ সাহিত্য

মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের ধারায় শিবায়ন ও নাথ সাহিত্যের বিশেষ ভূমিকা আছে। বিভিন্ন পরীক্ষায় এই বিষয়গুলি থেকে প্রশ্ন এসে থাকে। তাই আমরা এই পোস্টে শিবায়ন ও নাথ সাহিত্য থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলে ধরলাম। ছাত্রছাত্রীদের কাজে লাগলে আমাদের শ্রম সার্থক হবে।

১) শিবায়ন কী ?
শিবায়ন প্রকৃত পক্ষে শিবমঙ্গল । শিবায়নের প্রধান কবি গণ — রামকৃষ্ণ রায়, রামেশ্বর চক্রবর্তী, শঙ্কর চক্রবর্তী।
২) কবি রামকৃষ্ণের কাব্যে কয়টি পালা আছে ?
কবি রামকৃষ্ণের কাব্যে ২৫টি পালা আছে।
৩) কবি রামকৃষ্ণ রায়ের কাব্যরচনাকাল কোন সময়ে ?
সপ্তদশ শতক
৪) শিবায়নের কোন কবি ‘কবিচন্দ্র’ উপাধি পেয়েছিলেন ?
কবি রামকৃষ্ণ রায়
৫) রামেশ্বর চক্রবর্তীর শিবায়ন কয়টি পালায় বিভক্ত ?
৮টি।
৬) রামেশ্বর চক্রবর্তী কোন সময়ের কবি ?
অষ্টাদশ শতকের কবি।
৭) শিবায়নের কোন কবি তাঁর কাব্যে ‘দ্বিজ কবিচন্দ্র’ ভণিতা ব্যবহার করেছেন ?
কবি শঙ্কর চক্রবর্তী
৮) শঙ্কর চক্রবর্তীর কাব্যের নাম ও রচনাকাল লেখ।
শঙ্কর চক্রবর্তীর কাব্যের নাম ‘শিবমঙ্গল’। কাব্যটি মোটামুটি ১৬৮০ খ্রি. রচিত।
৯) শিবায়নের অন্যান্য কবি কারা ?
শঙ্কর – বৈদ্যনাথ মঙ্গল
দ্বিজ মণিরাম – বৈদ্যনাথ মঙ্গল
দ্বিজ কালিদাস – কালিকাবিলাস
লক্ষণ দেব – শিবের গীত
দ্বিজ নিত্যানন্দ – শিবায়ন মৎস্য ধরার পালা
দ্বিজ রামচন্দ্র – হর পার্বতী মঙ্গল
পৃথ্বীচন্দ্র – গৌরীমঙ্গল
(১০) মৃগলুব্ধ কী ? কবি কে ?
চট্টগ্রামে শিব মহিমা বিষয়ে যে কয়েকটি পৌরাণিক পুথি পাওয়া যায় তাকে মৃগলুব্ধ বলে । এর কবি রতিদেব ও রাম রাজা

নাথ সাহিত্য

১) গোরক্ষনাথ কোন কাব্যের চরিত্র ? তিনি কার শিষ্য ?
গোরক্ষনাথ ‘গোরক্ষবিজয়’ কাব্যের চরিত্র। তিনি মীননাথের শিষ্য।
২) ‘গোরক্ষবিজয়’ কাব্যটির রচয়িতা কে ?
‘গোরক্ষবিজয়’ কাব্যটির রচয়িতা সম্পর্কে ভিন্ন মত প্রচলিত। ড. দীনেশচন্দ্র সেনের মতে কাব্যটি লিখেছেন ৪ জন – কবীন্দ্র দাস, ফয়জুল্লা, ভীমদাস ও শ্যামদাস। আবার ড. সুকুমার সেনের মতে এই কাব্যের কবি ৩ জন – ভীমসেন, শ্যামদাস ও ফয়জুল্লা। তবে অনেকেই কাব্যের কবি হিসেবে ফয়জুল্লার নাম উল্লেখ করতে চেয়েছেন।
৩) ‘মীনচেতন’ কী ? এর সঙ্কলন কখন হয় ?
নাথ ধর্ম, তাদের আচার আচরণ নিয়ে যে আখ্যান কাব্য রচিত হয়েছে তাই মীনচেতন নামে পরিচিত। ‘মীনচেতন’এর আখ্যান গুলি সঙ্কলিত হয় সপ্তদশ শতাব্দীতে।
৪) ‘মীনচেতন’ সম্পর্কিত কোন কোন কাব্য কারা কখন প্রকাশ করেন ?
শ্যামদাস সেনের লেখা ‘মীনচেতন’ সম্পাদনা করেন নলিনীকান্ত ভট্টশালী ১৯১৫ খ্রি
ফয়জুল্লার ‘গোরক্ষবিজয় সম্পাদনা করেন মুন্সি আব্দুল করিম ১৯১৭ খ্রি।
ভীমসেনের ‘গোরখবিজয়’ সম্পাদনা করেন পঞ্চানন মন্ডল ১৯৪১ খ্রি।
৫) ‘গোপীচন্দ্রের গান’ কাদের সম্পাদনায় কখন প্রকাশিত হয় ?
ভবানী দাসের লেখা ‘গোপীচন্দ্রের পাঁচালী’ সম্পাদনা করে প্রকাশ করেন বিশ্বেশ্বর চট্টোপাধ্যায় দীনেশচন্দ্র সেন ও বসন্ত রঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ ১৯২৪ খ্রি।
সুকুর মহম্মদের লেখা ‘গোপীচন্দ্রের সন্ন্যাস’ সম্পাদনা করে প্রকাশ করেন নলিনীকান্ত ভট্টশালী ১৯২৫ খ্রি।
৬) ‘গোপীচন্দ্রের গান’ কটি খন্ডে বিভক্ত ও কী কী ?
‘গোপীচন্দ্রের গান’ ৫টি খন্ডে বিভক্ত। খন্ডগুলি হল জন্ম খন্ড, বুঝান খন্ড, পন্ডিত খন্ড, মুন্ডন খন্ড ও সন্ন্যাস খন্ড।
৭) ‘গোপীচন্দ্রের গানে’র চরিত্র গুলি কী কী ?
‘গোপীচন্দ্রের গানে’র চরিত্র গুলি হল রাজা মাণিকচন্দ্র, গোপীচন্দ্র বা গোবিন্দচন্দ্র, ময়নামতী, হীরানটী

আলোচক – নীলরতন চট্টোপাধ্যায়, টার্গেট বাংলা