অন্যান্য সাহিত্যিককাব্য ও কবিতা

যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত – দুঃখবাদী কবি

বাংলা কাব্য সাহিত্যের জগতে ‘দুঃখবাদী কবি’ হিসেবে পরিচিত কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত। বাংলা কাব্যাকাশে রবি-দীপ্তি যখন প্রখর তখন আপন স্বাতন্ত্র্যে বাঙালি পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন এই ইঞ্জিনিয়র কবি। আমাদের এই পোস্টে কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত সম্পর্কে আলোকপাত করার চেষ্টা করা হয়ছে।

কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত  – পরিচিতি

কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের জন্ম ২৬ জুন, ১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব বর্ধমানের পাতিলপাড়ায়। যদিও কবির পৈতৃক নিবাস নদীয়া জেলার শান্তিপুরে। পিতার নাম দ্বারকানাথ।  তিনি ১৯১১ সালে হাওড়ার শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে স্নাতক করেন। ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে নদীয়া জেলা বোর্ড ও পরে কাশিমবাজার রাজ এস্টেটে কাজ করেন। পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন ইঞ্জিনিয়র।

বাংলা কাব্যে তাঁর আবির্ভাব রবীন্দ্র-বিরোধী কবি হিসেবে। তবে তিনি রবীন্দ্র-বিদ্বেষী ছিলেন না। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের প্রতি তিনি অগাধ শ্রদ্ধাশীল থেকেই তাঁর বিরোধিতা করেছেন। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন আনন্দের পূজারী। তিনি জগতে আনন্দ-যজ্ঞ অনুভব করেন। কিন্তু কবি যতীন্দ্রনাথ জগতে সেই আনন্দ দেখতে পান না। তাঁর কাছে জগৎ দুঃখে পরিপূর্ণ। তবে যতীন্দ্রনাথের দুঃখভাবনার মূলে আছে গভীর সমাজ ভাবনা। তবে কবি যতীন্দ্রনাথ রবীন্দ্র-প্রভাব মুক্ত হতে চাইলেও তাঁর কাব্যে রবীন্দ্রনাথের ভাব, ভাষা ও ছন্দের প্রভাব আছে। আমরা যতীন্দ্রনাথের কবি বৈশিষ্ট্যকে এভাবে বলতে পারি –

  • তাঁর কাব্যে তথাকথিত রোমান্টিকতা নেই।
  • যতীন্দ্রনাথের কাব্যে বস্তুনিষ্ঠা দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশিত হয়েছে।
  • তথাকথিত আধ্যাত্মিক চিন্তা ও ভাববিলাসকে তিনি ধিক্কার জানিয়েছেন।
  • ঈশ্বকে তিনি বন্ধুর আসনে বসিয়েছেন।

যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত  – কাব্যগ্রন্থ

  • মরিচিকা (১৯২৩), মরুশিখা (১৯২৭), মরুমায়া (১৯৩০), সায়ম (১৯৪০), ত্রিযামা (১৯৪৮) এবং নিশান্তিকা (১৯৫৭)
  • কাব্যসংকলন : অনুপূর্বা (১৯৪৬)
  • কাব্য আলোচনামূলক গ্রন্থ – কাব্যপরিমিতি (১৯৩৮)

কবির ছদ্মনাম : শ্রী বিপ্রতীপ গুপ্ত

আলোচক – নীলরতন চট্টোপাধ্যায়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *