‘পালাবদল’ -এর কবি অমিয় চক্রবর্তী
আধুনিক বাংলা কবিদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য আধ্যাত্মিক কবি হলেন কবি অমিয় চক্রবর্তী (১০ ই এপ্রিল, ১৯০১ – ১২ ই জুন, ১৯৮৬)। জীবনে নানান ঘাত প্রতিঘাত কবি মনে আধ্যাত্মিক চেতনার পথকে সমৃদ্ধ করেছে। মৃত্যু কবির জীবন কে বিহ্বল করে তোলে। কবির জীবনের বেশ কিছুটা সময় তিনি রবীন্দ্রনাথের স্নেহধন্যে কাটান। শান্তিনিকেতনের পরিবেশ কবির মন গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। কবি তাঁর আত্মার স্পন্দন খুঁজে পান উপনিষদে।
অমিয় চক্রবর্তী র কাব্য সমূহঃ
অভিজ্ঞান বসন্ত (১৯৪৩) তিনি ছিলেন সত্য, শিব ও সুন্দরের উপাসক।এই বিশ্ব জগতে যা মঙ্গলময় তা সবই সুন্দর। এই কাব্যের একটি উল্লেখযোগ্য কবিতা হল – “চিঠি”।
একমুঠো (১৯৩৯) এটি কাব্য রচনার সময় বিশ্বযুদ্ধ জনিত ভয়াল ছায়া সমগ্র পৃথিবীকে গ্রাস করেছে। এই পর্বের কবিতাতেও রবীন্দ্র প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। এই কাব্যগ্রন্থ তিনি রবীন্দ্রনাথকে উৎসর্গ করেন। ১৯৩৯ এ কাব্যটি প্রকাশিত হয়। এই কাব্যের একটি বিখ্যাত কবিতা হল – “চেতন স্যাকরা”।
দূরযানী (১৯৪৪) রবীন্দ্রনাথের প্রভাব এই কাব্যেও পরলক্ষিত হয়। কবি সর্বদা মিলনের কথা বলেন। তিনি মিলনের কবি। তাই যুগযন্ত্রনাকে দেখে তিনি ভেঙে পড়েননি। তারই প্রতিফলন দেখা যায় এই কবিতায়।
পালাবদল এটি প্রকাশিত হয় ১৯৫৯ এ। এই পর্বের রচনায় কবির অন্তদৃষ্টির পরিচয় পাওয়া যায়।
পারাপার (১৯৫৩) এটি অমিয় চক্রবর্তীর একটি বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ। কবি বার বারই ফিরে আসেন প্রানের কাছে। “চিরদিন”, ” বড়োবাবুর কাছে নিবেদন” প্রভৃতি এই কাব্যের কিছু বিখ্যাত কবিতা।
কবির অন্যান্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল – খসড়া (১৯৩৮) মাটির দেওয়াল (১৯৪২) ঘরে ফেরার দিন (১৯৬১) হারানো অর্কিড (১৯৬৬) অমরাবতী (১৯৭২) প্রভৃতি।
কিছু অজানা তথ্য
অমিয় চক্রবর্তীর প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় ১৯২৭ এ, বিচিত্রা সাময়িক পত্রিকায়।
প্রথম কাব্যগ্রন্থ খসড়া (১৯৩৮)।
তিনি রবীন্দ্রনাথের ব্যক্তিগত সচিব ছিলেন।
তার উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধ বইটি হল “সাম্প্রতিক”(১৯৬৩)
অমিয় চক্রবর্তী বাংলা আধুনিক কবিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আধ্যাত্মিক কবি।তার কবিতায় প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সাহিত্বলব্ধ জ্ঞান পরিলক্ষিত হয়। তিনি মিলনের কথা বলেন, তিনি প্রাণের কাছ তথা জীবনের কাছে ফিরে আসতে চান বারে বারেই।
লেখকঃ সুকান্ত চ্যাট্টার্জী