গুরু নাটক – কিছু শব্দের অর্থ ও টীকা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘গুরু’ একটি রূপক ও সাঙ্কেতিক নাটক যা কবির ‘অচলায়তন’ নাটকের অভিনয়োপযোগী সংস্করণ। এই নাটকে আমরা এমন অনেক শব্দ পাই যা আমাদের কাছে অভিনব ও নতুন। সেই সমস্ত শব্দের অর্থ সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা না থাকলে নাটকের ভাব তথা চরিত্রের বিষয়ে বোঝা কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে। ছাত্রছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে আমরা গুরু নাটক – কিছু শব্দের অর্থ ও টীকা শীর্ষক এই পোস্টে উক্ত নাটক থেকে জটিল শব্দের অর্থ ও যথাসম্ভব টীকা উল্লেখ করেছি। আশা করি সকলের সহায়তা করবে এই পোস্ট।
গুরু নাটকের কিছু শব্দের অর্থ ও টীকা
♦ অচলায়তন – অগ্রগতির রক্ষণশীল প্রতিষ্ঠান।
♦ উপাধ্যায় – অধ্যাপক।
♦ গুরু – শিক্ষাদানকারী।
♦ পঞ্চম স্বর – পঞ্চগ্রামের পঞ্চম স্বর হল পা। এই স্বর কোকিলের মত সুরেলা।
♦ অমিতায়ুর্ধারিনী মন্ত্র – যে মন্ত্র উচ্চারন করলে আয়ু বাড়ে।
♦ একজটা দেবী – কালিকাপুরাণে বর্ণিত উগ্রতারার আরেক নাম।এর চার হাত।কৃষ্ণবর্না, মুণ্ডমালিনী, দুই দক্ষিন হাতে কড়্গ আর বাম হাতে কর্ত্রী আর খর্পর।মাথায় জটা।বুকে সর্পহার,চক্ষু রক্তবর্ণ, কটিদেশে ব্যাঘ্রচর্ম। অষ্টযোগিনী পরিবৃতা।
♦ মহাময়ুরী দেবী – কাল্পনিক দেবী। মনসার সাথে কল্পনা করা হয়েছে।ময়ুর সাপের শত্রু।কিন্তু মহাময়ুরী হলেন ময়ুর বিজেতা।,তাদের অধিশ্বরী।
♦ পূর্বফল্গুনী নক্ষত্র – সপ্তবিংশতি নক্ষত্রের মধ্যে একটি খর্বাকৃতি নক্ষত্র হল পূর্বফল্গুনী নক্ষত্র।
♦ কাকিনী সরোবর – কাল্পনিক সরোবর। কাকিনী শব্দের অর্থ কুচফল। সোনার পরিমাপে ব্যবরূত হয়। লোকসংস্কার ও বিশ্বাসকে ব্যঙ্গ করার উদ্দেশ্যে এই শব্দটির নির্মাণ।
♦ ভুমিকুস্মান্ড – ভুঁই কুমড়ো। মাটির নিচে যে কুমড়ো হয়।
♦ পরমার্থতত্ত্ব – ঈশ্বর সাধনা বিষয়ক তত্ত্ব। ব্যঙ্গার্থে শব্দটি ব্যবহার করেছেন নাট্যকার।
♦ তিনশো পঁয়তাল্লিশ বছরের আগল – অন্ধকার ও কুসংস্কার বোঝাতে ব্যবরূত হয়েছে এই সংখ্যাটি।
♦ ঢোঁড়া সাপের খোলস – বিষহীন সাপ।এরা মাঝে মাঝে খোলস ছাড়ে।কুসংস্কারে আচ্ছন্ন মানুষের বিশ্বাস পূর্বফাল্গুনী নক্ষত্রের পুন্য তিথিতে কাকিনী সরোবরের নৈঋত কোন থেকে ঢোঁড়া সাপের খোলস সংগ্রহ করতে হয়।সেই খোলস কালো ঘোড়ার লেজের সাত গাছি চুল দিয়ে বেধে পোড়ালে পূর্ব পুরুষেরা সে ধোঁয়ার ঘ্রান নিতে আসে।
♦ কুলদত্তের ক্রিয়া সংগ্রহ – এটি একটি কাল্পনিক নীতি সংক্রান্ত বই। নিত্যকর্ম ও অন্যান্য ক্রিয়া আচার সংক্রান্ত সমাজনীতি গ্রন্থের অনুসরনে কুসংস্কারকে তীব্র ব্যঙ্গ করার উদ্দেশ্যে এই গ্রন্থের নামটি নাট্যকার সৃষ্টি করেছেন বলে আমার মনে হয়। নীতিশাস্ত্রে থাকে আদর্শ সামাজিকের করনীয় কৃত্য – কোন ধরনের পাপ কাজ করলে তার প্রায়শ্চিত্ত বিধান এই গ্রন্থের আঠারোটি অধ্যায়ে তা বিন্যস্ত বলে নাট্যকার জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন
♦ ভরদ্বাজ মিশ্রের প্রয়োগপ্রজ্ঞপ্তি – শাস্ত্রজ্ঞ ভরদ্বাজ মিশ্র রচিত শাস্ত্রাচারমুলক গ্রন্থের নাম। এতে শাস্ত্রের নিয়ম কীভাবে প্রয়োগ করা যাবে এবং তা প্রয়োগ না করলে কী পাপ হবে সে সম্পর্কে বিধান দেওয়া আছে। এতে জীবন অপেক্ষা প্রথা ও ধর্মরীতির উপর বেশী গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আচার সর্বস্ব রক্ষণশীল মানুষের কাছে গ্রন্থটি মুল্যবান।
♦ মহাতামস ব্রত – জ্বলনানন্তকৃত ‘আধিকর্মিক বর্ষায়ণ’ গ্রন্থে ঘোরতর অন্ধকার কক্ষে থেকে এ ব্রত পালন করার নির্দেশ রয়েছে।
♦ হিঙ্গুমর্দন কুন্ড – একটি বিশেষ কুন্ড। এটি কাল্পনিক।ব্যঙ্গের জন্য ব্যবরূত।
♦ অষ্টাঙ্গ শুদ্ধি ব্রত – জল পান না করে পাপস্খলনের ব্রত। এই ব্রতে কুশলশীল নামে এক বালক তৃতীয় রাতে জল জল করে মারা গেছে। অষ্ট অঙ্গকে এই ভাবেই শুদ্ধ করতে হয়।
♦ স্থবির পত্তন – রাজ্যের নাম। যে রাজ্য সূচনা থেকেই অনড়।
♦ যুনক – অন্ত্যজ শ্রেনীর মানুষ। এরা কৃষক।
♦ বজ্রবিদারক মন্ত্র – যে মন্ত্র দ্বারা বজ্রকেও বিদির্ন করা যায়।
♦ কেয়ুরী মন্ত্র – তন্ত্রে উল্লেখিত এক ধরনের মন্ত্র।
♦মরীচী – তন্ত্রের মন্ত্র।
♦ মন্থর গুপ্ত – এক ভয়ঙ্করী দেবী। যার পূজায় মানুষ বলি দেওয়া হয়।
♦ ষড়ক্ষরিত – ছয় রকমের পবিত্র তরল। গোমূত্র, গোময়, দুধ, দধি, ঘৃত, গোরোচনা।
♦ ঘটশুদ্ধি – পূজার্চনার আগে কলশির জলকে পবিত্র করা।
গুরু নাটক আরও দেখুন
♦ পংক্তি ধৌতি – মন্ত্রপাঠের দ্বারা একত্রিতভাবে বসার স্থান শুদ্ধ করা। জায়গা পরিষ্কার করার বিশেষ শাস্ত্রীয় আচার।
♦ ভরদ্বাজ মিশ্রের প্রয়োগপ্রজ্ঞপ্তি – শাস্ত্রজ্ঞ ভরদ্বাজ মিশ্র রচিত শাস্ত্রাচারমুলক গ্রন্থের নাম। এতে শাস্ত্রের নিয়ম কীভাবে প্রয়োগ করা যাবে এবং তা প্রয়োগ না করলে কী পাপ হবে সে সম্পর্কে বিধান দেওয়া আছে। এতে জীবন অপেক্ষা প্রথা ও ধর্মরীতির উপর বেশী গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আচার সর্বস্ব রক্ষণশীল মানুষের কাছে গ্রন্থটি মুল্যবান।
♦ মহাতামস ব্রত – জ্বলনানন্তকৃত ‘আধিকর্মিক বর্ষায়ণ’ গ্রন্থে ঘোরতর অন্ধকার কক্ষে থেকে এ ব্রত পালন করার নির্দেশ রয়েছে।
♦ হিঙ্গুমর্দন কুন্ড – একটি বিশেষ কুন্ড। এটি কাল্পনিক।ব্যঙ্গের জন্য ব্যবরূত।
♦ অষ্টাঙ্গ শুদ্ধি ব্রত – জল পান না করে পাপস্খলনের ব্রত। এই ব্রতে কুশলশীল নামে এক বালক তৃতীয় রাতে জল জল করে মারা গেছে। অষ্ট অঙ্গকে এই ভাবেই শুদ্ধ করতে হয়।
♦ স্থবির পত্তন – রাজ্যের নাম। যে রাজ্য সূচনা থেকেই অনড়।
♦ যুনক – অন্ত্যজ শ্রেনীর মানুষ। এরা কৃষক।
♦ বজ্রবিদারক মন্ত্র – যে মন্ত্র দ্বারা বজ্রকেও বিদির্ন করা যায়।
♦ কেয়ুরী মন্ত্র – তন্ত্রে উল্লেখিত এক ধরনের মন্ত্র।
♦মরীচী – তন্ত্রের মন্ত্র।
♦ মন্থর গুপ্ত – এক ভয়ঙ্করী দেবী। যার পূজায় মানুষ বলি দেওয়া হয়।
♦ ষড়ক্ষরিত – ছয় রকমের পবিত্র তরল। গোমূত্র, গোময়, দুধ, দধি, ঘৃত, গোরোচনা।
♦ ঘটশুদ্ধি – পূজার্চনার আগে কলশির জলকে পবিত্র করা।
♦ পংক্তি ধৌতি – মন্ত্রপাঠের দ্বারা একত্রিতভাবে বসার স্থান শুদ্ধ করা। জায়গা পরিষ্কার করার বিশেষ শাস্ত্রীয় আচার।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার:
১. সংসদ বাংলা অভিধান
২. বাংলা ভাষার অভিধান – জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস
৩. বাংলা পৌরাণিক অভিধান
৪. চলন্তিকা
৪. বাংলা নির্দেশিকা – অশোককুমার মিশ্র