চর্যাপদ

চর্যাপদ – মূল পদের সরল বাংলা অনুবাদ

এই প্রচ্ছদে বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন চর্যাপদের মূল পদগুলির সরল বাংলা অনুবাদ এবং বিভিন্ন শব্দের টীকা পাওয়া যাবে। চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের আদিতম নিদর্শন। এর ভাষাও ‘সন্ধ্যাভাষা’। মূলত সাধন তত্ত্বের কথা থাকলেও কাব্যসৌন্দর্যেও পূর্ণ এই পদগুলি। আমাদের এই আলোচনায় চর্যাপদগুলির মূলপদ সহ বাংলায় আক্ষরিক অনুবাদ ও বিভিন্ন প্রাচীন শব্দের অর্থ দেওয়া হয়েছে। এটি আলোচনার প্রথম পর্ব। দ্বিতীয় পর্বের জন্য এখানে ক্লিক করুন

চর্যাপদ – ১ [ পদটি লুই পার লেখা এবং পটমঞ্জরী রাগ ব্যবহৃত হয়েছে]

কাআ তরুবর পঞ্চ বি ডাল।
চঞ্চল চীএ পইঠো কাল।।
দিঢ় করিঅ মহাসূহ পরিমাণ।
লুই ভণই গুরু পুচ্ছিঅ জাণ।।
সঅল স [মা] হিঅ কাহি করিঅই ।
সুখদুখেতেঁ নিচিত মরিআই ।।
এড়িএউ ছান্দক বান্ধ করণক পাটের আস।
সুন্ন পাখ ভিড়ি লাহু রে পাস।।
ভণই লুই আম্‌হে ঝাণে দিঠা।
ধমণ চমণ বেণি পিণ্ডি বইঠা।।

শব্দার্থ ও টীকা 
কাআ = কায় বা দেহ, পঞ্চবি = পাঁচটি, চীএ = চিত্তে, পইঠো = প্রবেশ করেছে, দিঢ় = দৃঢ়, করিঅ = করে, মহাসূহ = মহাসুখ, ভণই = ভণিতা করে, পুচ্ছিঅ = জিজ্ঞাসা করে, জাণ = জান, সঅল = সকল, সুখদুখেতেঁ = সুখেদুঃখে, নিচিত = নিশ্চিত,  সুন্ন = শূন্য,

চর্যাপদ – ২ [পুথিপৃষ্ঠা ৪।খ রাগ- গবড়া কবি – কুক্কুরীপা]

দুলি দুহি পিটা ধরণ না জাই।
রুখের তেন্তলি কুম্ভীরে খাতা।।
আঙ্গণ ঘরপণ সুণ ভো বিআতী।
কানেট চৌরি নিল অধরাতী।ধ্রু।।
সুসুরা নিদ গেল বিহুড়ী জাগঅ।
কানেট চোরে নিল কা গই মাগঅ।।ধ্রু।।
দিবসই বহুড়ী কাউই ডরে ভাঅ।
রাতি ভইলেঁ কামরু জাঅ।।ধ্রু।।
অইসন চর্যা কুক্কুরীপাএঁ গাইউ।
কোড়ি মঝেঁ একু হিঅহিঁ সমাইউ।।ধ্রু।।

শব্দার্থ ও টীকা 
দুলি- কাছিম, দুহি – দহন করা, বিআতি- বিবাহযোগ্য নারী, চৌরি – চোরে, গই- গিয়ে, মাগঅ- খোজা যায়, দিবসই- দিনের বেলা, ভাঅই- ভীত হওয়া, কাউ- কাক, কামরু- কামরুপ।

বাচ্যার্থ
মাদি কাছিম দহন করা হল, পাত্রে দুধ ধরে না। গাছের তেঁতুল কুমীরে খায়। আঙ্গিনাতেই ঘর – সংসার। ওগো বধূ শোনো। অর্ধরাত্রে চোর এসে কানেট ( কানের অলংকার) নিয়ে গেল, শ্বশুর নিদ্রা,বধূ জেগে রইল। দিনে বধূ কাকের ভয়ে ভীত হয় রাত্রিতে কামসেবার্থে যায়। এই চর্যা কক্কুরীপা এর দ্বারা গাওয়া হয়।

গূঢ়ার্থ 
দুলি অর্থ সর্ব প্রকার দ্বৈতত্ব বা তার প্রতীক দেহের দুই পাশের দুই নাড়ী। দোহন জাত বস্তু সংবৃত্তি বোধিচিত্ত পীঠ নাভিদেশে অবস্থিত মণিপুর চক্র।বৃক্ষ দেহবৃক্ষ,তেন্তলি বক্রগামী বোধিচিত্ত,কুম্ভীর যৌগিক কুম্ভক, কুম্ভক যোগে বোধিচিত্তকে নিঃস্বভাবিকৃত করা যায়। বিআতি ও বহুড়ী হল অবধূতিকা। সহজানন্দের আশ্রয় মহাসুখচক্রই হল ঘর এবং অঙ্গন হল বিরমানন্দস্থান। কানেট হল প্রকৃতি দোষ, চোর সহজানন্দ। অর্ধরাত্রি হল সহজানন্দে বিলীন হবার পূর্বক্ষণ।শ্বশুর শ্বাসবায়ু।দিবস চিত্তের প্রবৃত্তিময় অবস্থা,রাত্রি নিবৃত্তির অবস্থা এবং কামরুপ মহাসুখচক্র।

এই সব সন্ধ্যাভাষার মাধ্যমে আসলে সহজানন্দ উপভোগের উপায়ই বর্ণনা করা হয়েছে।বামগা ঈ দক্ষিণগা নাড়ীর দ্বৈতত্ব ও স্বাভাবিক গতি নষ্ট করে তাদের মধ্যমার্গে একত্রিত করলে বোধিচিত্তকে আর নাভিস্থিত মণিপুরচক্রে ধরে রাখা যায় না,তা উর্দ্ধগামি হয়।কুম্ভক যোগের দ্বারা বোধিচিত্তকে বিশুদ্ধ করা যায়। বোধিচিত্তকে নিঃস্বভাবিকৃত করে মধ্যমার্গে উর্ধ্বগামি করলে সাধকের যে আনন্দ হয় সেই আনন্দানুভুতির তৃতীয় ও চতুর্থ স্তর হল বিরমানন্দ ও সহজানন্দ আঙ্গিনা ও ঘরের মতোই পরস্পরের সমীপবর্তী। সহজানন্দে বিলীন হবার পূর্বক্ষণে সাধক যদি কুম্ভকযোগে চিত্তের প্রকৃতিদোষ হরণ করেন তবে তিনি এই আনন্দ লাভ করেন। সাধকের পক্ষে এই প্রকৃতি প্রভাস্বর সর্বশূণ্য অবস্থাই পরম কাম্য। পারমার্থিক অবস্থায় চিত্ত নির্বিকল্পাকারে মহাসুখচক্রে গমন করে।

চর্যাপদ – ৩ [ রাগ – গবড়া, পদকর্তা – বিরুপা]

এক সে সুন্ডিনি দুই ঘরে সান্ধঅ।
চীঅণ বাকলঅ বারুণি বান্ধঅ।।
সহজে থির করী বারুণী সান্ধে।
জে অজরামর হোই দিঢ় কান্ধে।।
দশমি দুআরত চিহ্ন দেখইআ।।
আইল গরাহক অপণে বহিআ।।
চউশঠী ঘড়িয়ে দেঢ় পসারা।
পইঠেল গরাহকা নাহি নিসারা।।
এক ঘড়ুলী সরুই নাল।
ভণন্তি বিরুআ থির করি চাল।।

শব্দার্থ ও টীকা
সুন্ডিনি – শুঁড়ী বৌ / অবধূতিকা, সান্ধঅ- সন্ধ্যায়, চীঅন- সুপারী গাছ, বাকলঅ- গাছের ছাল, বান্ধঅ- মদ ফেনিয়ে তোলা, সান্ধে – মদ গাঁজায়,জেঁ- যেন, কান্ধ- দেহের পাঁচটি স্কন্ধ যার দ্বারা দেহ গঠিত, দুআরত- দ্বারে, গরাহক- গ্রাহক, ঘড়িএ- ঘড়ি, দেঢ়- অধিক, পসরা- পসার, গরাহক- গ্রাহক, ঘড়ুলী- ছোট ঘড়া।

বাচ্যার্থ
এক সে শুঁড়ি মেয়ে দুইকে নিয়ে ঘরে সাঁধায়( ঢোকে)।সুপারির ছালের বাখর দিয়ে মদ বাঁধে। সহজে থিতিয়ে মদ গাঁজায় যাতে অজরামর ও দৃঢ় স্কন্দ হওয়া যায়।দশমী দুয়ারে চিহ্ন দেখে গ্রাহক নিজেই এসে উপস্থিত হল।চৌষট্টি ঘড়ায় ( মদের) ঢের ( অঢেল) পসরা ; প্রবিষ্ট গ্রাহকেরনিস্ক্রমণ নেই।ছোট একটি ঘড়া,নল তার সরু। বিরুআবলেন স্থির করে চালাও।

গূঢ়ার্থ 
মদ চোলাই ও বিক্রয়ের রুপকে বামগা – দক্ষিন গা নাড়ীদ্বয়কে নিঃস্বভাবিকৃত করে মধ্যমার্গে এনে মহাসুখলাভের যৌগিক সাধন পদ্ধতির কথা বর্ণিত হয়েছে। দেহের বামদিকে প্রজ্ঞানাড়ী, দক্ষিণ দিকে উপায় নাড়ী, প্রজ্ঞানাড়ীর গ্রাহকভাব ও উপায় নাড়ীর গ্রাহ্যভাব, এদের মাঝখানে অবধূতি নাড়ী গ্রাহ্য – গ্রাহকভাব বর্জিত। এক অবধূতির মধ্যে দুই নাড়ীর প্রবেশ ঘটেছে। গ্রাহ্যগ্রাহকভাব বিসর্জন দিয়ে অবধূতি মার্গে প্রজ্ঞোপায়ের মিলন ঘটেছে । মহাসুখচক্রের প্রবেশদ্বারে মহাসুখোপ্রমোদের চিহ্ন দেখে বোধিচিত্ত তা নিজেই উপভোগ করার জন্য উপস্থিত হল এবং চতুর্দিকে আনন্দের উপকরণ দেখে মহাসুখে বিভোর হল।অবধূতি হল মদের ঘটী।অর্থাৎ এর সাধনা করলে মহাসুখামৃতের সন্ধান মেলে। মহাসুখ সংঘটন করে বলেই অবধূতি ঘটী এবং গ্রাহ্য গ্রাহক দ্বৈতাভাসবর্জিত বলে অবধূতি সরু। বিরুপার উপদেশ এই সরু অবধূতি মার্গেই বোধিচিত্ত কে স্থিরভাবে চালনা কর।

চর্যাপদ – ৪ [ রাগ – অরু , পদকর্তা – গুন্ডরী পা]  

ভিঅড্ডা চাপী জোইণি দে অংকবালী।
কমলকুলিশ ঘাণ্টে করহুঁ বিআলী।।
যোইণি তঁই বিণু খনহি ন জীবমি।
তো মুহ চুম্বী  কমলরস পীবমি।।
খেপহু জোইণি লেপ ন জায়।
মণিকূলে বহিআ ওড়িআণে সমাঅ।।
সাসু ঘরে ঘালি কোঞ্চা তাল।
চান্দসূজ বেণি পখা হাল।।
ভণই গুডরী অম্‌হে কুন্দুরে ধীরা।
নরঅ নারী মাঝে উভিল চীরা।।

শব্দার্থ
তিঅড্ডা- ত্রিকোণ, অঙ্কবালী – আলিঙ্গন, ঘান্টে- ঘর্ষণ/আলোড়ন, করহুঁ- কর, বিআলিক- বিকালিক, খনহিঁ- ক্ষন, ওড়িয়ানে- উড্ডীয়ানে, সমাঅ- সমায়ত, পখা- পক্ষ, হল্যত- হাল।
 
বাচ্যার্থ
তেওড়া( জঘন) চেপে যোগিনী ( সাধক কে) আলিঙ্গিন দেয়,পদ্ম ও বজ্রের সংঘর্ষে কাল কাটিয়ে দাও। যোগিনী তোকে ছাড়া মুহুর্ত ও বাঁচিনা,তোর মুখ চুম্বন করে কমলরস পান করি।ক্ষেপন হেতু উৎক্ষিপ্ত যোগিনী লিপ্ত হয় না,মণিমূল বেয়ে ওড়িয়ানে প্রবেশ করে। শাশুড়ীর ঘরে চাবি তালালাগান হল,চন্দ্র সূর্য দুইপাখা খণ্ডিত হল। গুডরী বলে আমি সুরত ক্রিয়ায়ধীর।নরনারী মাঝে বস্ত্র তোলা হল।
 
গূঢ়ার্থ 
ললনা- রসনা ও অবধূতি নাড়ী এই তিনটি কে চেপে তাদের গ্রাহ্যগ্রাহক প্রবাহ নাশ করে পরিশুদ্ধাবধূতিকা নৈরাত্মা নিজের স্বরুপ সাধনকে দান করেন। সাধক এই অবস্থায় প্রজ্ঞোপায়ের মিলনে কালরহিত হয়ে নিরবিচ্ছিন্নভাবে সহজানন্দ লাভ করেন। আমাদের চিত্ত অশুদ্ধ অবস্থায় অবিদ্যামোহে লিপ্ত বা অভিভূত থাকে কিন্তু যোগিনীর সাথে মিলনের উদ্দীপনা জাগলে তা আর মোহলিপ্ত থাকে না ক্রমে মণিপুর তথা নাভিচক্র থেকে ঊর্ধ্বগামী হয়ে মহাসুখচক্রে প্রবেশ করে। এর জন্য শ্বাসের ঘরে তালাচাবি লাগাতে হবে এবং চন্দ্র সূর্য দুই পক্ষ ছেদন করতে হবে। গুডরী পা বলেন কুন্দুর নামক যোগের দ্বারা অক্ষয় সুখলাভ করে তিনি ক্লেশশত্রুজয়ী বীর হয়েছেন।

চর্যাপদ – ৫ [ রাগ –  , পদকর্তা – চাটিল পা]

শব্দার্থ
বেগেঁ – বেগে বয়ে চলা, চিখিল- কর্দমাক্ত,ধামার্থে- ধর্ম/ ধাম, সাঙ্গম- সাঁকো, গঢ়ই – গড়ন করা,ফাড্ডিঅ- ফেটে যাওয়া, পাটি- পট্টিকা,জোড়িঅ- যুক্ত হওয়া, আদঅ- অদ্বয়,দিঢ়- দৃঢ়,কোহিঅ- কষিত,কোড়িঅ- ছিন্ন করা,সাঙ্কমত- সংক্রম, ণিয়ড্ডী – নিকট, জাহী- যা, তুমহে- তোমরা, সামী- স্বামী।
 
বাচ্যার্থ
গহন ভবনদী গম্ভীর বেগে বয়।দুই পাড়ে কাদা,মাঝে থৈ নেই।ধর্মের জন্য চাটিল সাঁকো গড়ে, পারগামী লোক নিশ্চিন্তে পার হয়।মোহতরু ফাড়া হল,পাটি জোড়া হল,অদ্বয় টাঙ্গী নির্বাণে দৃঢ় ভাবে হানা হল।সাঁকাতে চড়লে ডান – বাঁ হোয়ো না। বোধি নিকটেই,দূরে যেয়ো না।ওহে, যদি তোমরা পারগামী হবে তবেশ্রেষ্ঠ সাঁই চাটিলকে জিজ্ঞাসা কর।
গূঢ়ার্থ
বৌদ্ধ দর্শনতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব উভয়ই আলোচিত হয়েছে।প্রথম চার পঙ্কক্তিতে বৌদ্ধ দর্শনের মূলকথা ও বাকী অংশে অদ্বয় সাধনতত্ত্বের ইঙ্গিত আছে। বর্তমান গানে ভব বা অস্তিত্ব প্রবাহকে নদীপ্রবাহের সঙ্গে তুলনা করে এই অস্তিত্বপ্রবাহের প্রকৃতিদুষ্টতা ও প্রাতিভাসিক স্বরুপের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। দিবারাত্র বিষয়তরঙ্গের ওঠা নামার এই অস্তিত্ব প্রবাহ গহন বা ভয়ঙ্কর বিবিধ দোষের সংস্পর্শে এই প্রবাহ গভীর।এই ভবপ্রবাহ পার হবার জন্য ধর্মগুরু চাটিল এক সেতু নির্মাণ করেছেন। পারগামী লোকেরা সেই সেতুতে নিশ্চিন্তে পার হতে পারবে। অদ্বয়রুপ টাঙ্গী দিয়ে মোহরুপ তরুকে ছেদন করে তার পাটা দিয়ে এই সেতু গড়া হয়েছে। সেতুতে চড়ে বাম- দক্ষিণে ঝুঁকতে নেই। বোধি নিকটেই, দূরে যাবার প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ, নাভিচক্রে বোধিচিত্তের উদ্বোধন হলেই ক্রমে সহজানন্দ রুপ বোধি বা সিদ্ধি লাভ করা যায়। এই সিদ্ধি দেহেই আছে তার জন্য দূর তীর্থে যাবার দরকার নেই। দৃঢ় অদ্বয় জ্ঞানের দ্বারা অবিদ্যামোহে বা গ্রাহ্য গ্রাহকভাব বিনষ্ট করে, সাঁকোর যেমন নদীর দুই পাড়কে যুক্ত করা হয় তেমনি অবধূতী মার্গে দেহের বামগা- দক্ষিণ গা নাড়ীর ক্রিয়াধারাকে যুক্ত করে বোধিচিত্তকে জাগ্রত করলেই চরম প্রাপ্তি ঘটে। যার পারগমনে ইচ্ছুক অর্থাৎ চরম প্রাপ্তির প্রয়াসী তারা শ্রেষ্ঠ ধর্মগুরু চাটিলকে এবিষয়ে জিজ্ঞাসা করুক।
বিশ্লেষক – সুকান্ত চ্যাট্টার্জী, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। 

WATCH US ON YOUTUBE

5 thoughts on “চর্যাপদ – মূল পদের সরল বাংলা অনুবাদ

  • Avatar

    khub bhalo post. khub upokrito holam. dhonnobad janai.

    Reply
  • Avatar

    সব গুলি দিলে খুব ভালো হত

    Reply
  • দারুন সাজিয়েছেন।সবগুলো পেলে ভালো হত।

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *