সঞ্জয় ভট্টাচার্য – বাংলা সাহিত্যের এক স্বল্পালোচিত নাম
বাংলা সাহিত্যে যে সব কবি সাহিত্যিক স্বল্পালোচিত বা প্রায় অনালোচিত, যাদের কথা আমরা ‘হয়তো শুনেছি’ কিন্তু খুব ভাল করে তাদের বা তাঁদের রচনার কথা জানি না সেইসব শিল্পীদের নিয়ে আলোচনার জায়গা আমাদের এই প্রয়াস। আমরা শুধুমাত্র কিছু তথ্য দেওয়া বা জানার গণ্ডীর মধ্যে থাকতে চাই না। আমরা বাংলা সাহিত্যকে আমাদের ভালো লাগার, ভালোবাসার পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই। যাদের প্রতক্ষ্য বা পরোক্ষ অবদানের জন্য বাংলা সাহিত্য বিশ্বব্যাপী বিস্তার লাভ করেছে তাঁদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা জানানো আমাদের উদ্দেশ্য।
আমাদের আলোচ্য সঞ্জয় ভট্টাচার্য
সঞ্জয় ভট্টাচার্যকে আমরা চিনি ‘পূর্বাশার’ সম্পাদক হিসেবে। বাংলার ১৩৩৯ সনের বৈশাখ মাস থেকে বর্তমান বাংলাদেশের কুমিল্লা থেকে পত্রিকাটি প্রথম প্রকাশিত হয়। ‘কল্লোল’, ‘কালিকলম’ এর সমর্থন পায় সঞ্জয় ভট্টাচার্যের ‘পূর্বাশা’। আসলে তিনি একটি সাহিত্য গোষ্ঠী তৈরীর যাবতীয় আকুলতা নিয়ে এই পত্রিকাটি শুরু করেন। বাংলা সাহিত্যের উন্নয়ন কল্পে তিনি Academy of Literature ও গড়ে তোলেন। বাংলা সাহিত্যের প্রতি তাঁর ছিল অফুরান ভালোবাসা। কিন্তু দুঃখের বিষয় তাঁর কাঙ্খিত সাহিত্য গোষ্ঠী তৈরীতে বা যথার্থ সাহিত্য পত্রিকা হিসেবে এই পত্রিকা খুব সফল ভূমিকা নিতে পারেনি। মাঝে মধ্যেই বন্ধ হয়ে যাওয়া, থেমে থেমে প্রকাশ হওয়ায় এই পত্রিকার খুব একটা ধারাবাহিকতা ছিল বলা যায় না।
সাহিত্যকার সঞ্জয় ভট্টাচার্য বহুবিধ লেখক ছিলেন। গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ ও কবিতা সহ তিনি লিখেছেন প্রায় ৪৭টি গ্রন্থ। তাঁর প্রথম কবিতা ‘নীলিমা’ ‘কবিতা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তাঁর লেখা গদ্য কবিতা রবীন্দ্রনাথেরও পছন্দের ছিল। তাঁর কাব্য – ‘সাগর ও অন্যান্য কবিতা’ (১৯৩৭), পৃথিবী (১৯৪০) গল্পের বই ‘ফসল’ (১৯৩৮), ঋণ ও অন্যান্য গল্প (১৯৪৪) উপন্যাস বৃত্ত (১৯৪২), ‘কল্লোল’ (১৯৪৭) এবং প্রবন্ধ ‘তিনজন আধুনিক কবি’ (১৯৪৬), ‘কার্ল মার্ক্স (১৯৪৩)।
তথ্যসূত্র – বাংলা সাহিত্যের ইতিকথা, ভূদেব চৌধুরী
আলোচক – নীলরতন চট্টোপাধ্যায়, শিক্ষক, অ্যাডমিন, টার্গেট এসএসসি বাংলা